ইব্রীয়
গ্রন্থস্বত্ব
ইব্রীয়দের প্রতি লেখা পত্রটির রচয়িতা রহস্যের চাদরে আবৃত আছে। কতিপয় পন্ডিতগণের দ্বারা পৌলকে লেখক রূপে প্রস্তাবিত করা হয়েছে, কিন্তু প্রকৃত লেখক অজ্ঞাত রয়ে গেছে। খ্রীষ্টধর্মের প্রধান যাজক রূপে, সর্বোচ্চ আরোনিক যাজকত্ব, এবং ব্যবস্থা ও ভাববাদীদের পরিপূর্ণতা রূপে খ্রীষ্টকে এত অলঙ্কারপূর্ণ ভাবে অন্য কোনো পুস্তক সজ্ঞায়িত করে নি। পুস্তকটি খ্রীষ্টকে বিশ্বাসের আদিকর্তা এবং সিদ্ধিকর্তা রূপে উপস্থাপিত করেছে (ইব্রীয় 12:2)।
রচনার সময় এবং স্থান
আনুমাণিক 64 থেকে 70 খ্রিষ্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়।
ইব্রীয়দের প্রতি পত্রটি যিরুশালেমে লেখা হয়েছিল, খ্রীষ্টের আরোহণের পরে কোনো দিনের এবং যিরুশালেমের ধ্বংসের পূর্বে কোনো দিনের সময়।
গ্রাহক
পুস্তকটি প্রাথমিকভাবে যিহুদী ধর্মান্তরিতদের উদ্দেশ্যে সম্বোধিত করা হয়েছিল যারা পুরাতন নিয়মের সঙ্গে পরিচিত ছিল এবং যারা যিহুদী ধর্মের প্রতি ফিরে যেতে অথবা সুসমাচারকে যিহুদী ধর্মে পরিবর্তিত করতে প্রলুব্ধ হচ্ছিল। এটা আবারও প্রস্তাবিত করা হয়েছে যে বৃহৎ সংখ্যার যাজকগণের মধ্য থেকে গ্রাহক রা ছিল যারা বিশ্বাসের প্রতি বাধ্য হয়েছিল (প্রেরিতের কার্য 6:7)।
উদ্দেশ্য
ইব্রীয়দের লেখক তার শ্রোতাদের উপদেশ দিতে লিখেছিলেন যাতে করে তারা স্থানীয় যিহুদীগত শিক্ষাকে প্রত্যাখ্যান করে এবং যীশুর প্রতি বিশ্বস্ত থাকে এবং দেখায় যে যীশু খ্রীষ্ট উচ্চতর হচ্ছেন, ঈশ্বর পুত্র দেবদূত, যাজক, পুরোনো নিয়মের নেতাগণ অথবা যে কোনো ধর্মের থেকে উত্তম হচ্ছেন। ক্রুশে মৃত্যুবরণ কোরে এবং মৃত্যু থেকে পুনরুত্থিত হয়ে. যীশু বিশ্বাসীদের পরিত্রান এবং অনন্ত জীবনের দায়াধিকারী হচ্ছেন, আমাদের জন্য খীষ্টের বলিদান সিদ্ধ এবং সম্পূর্ণ ছিল, বিশ্বাস ঈশ্বরকে প্রসন্ন করে, আমরা আমাদের বিশ্বাসকে ঈশ্বরের প্রতি বাধ্যতার মাধ্যমে প্রকাশ করি।
বিষয়
খ্রীষ্টের শ্রেষ্ঠতা
রূপরেখা
1. যীশু খ্রীষ্ট দেবদূতের থেকে উচ্চতর — 1:1-2:18
2. যীশু ব্যবস্থা এবং পুরনো নিয়মের থেকে উচ্চতর — 3:1-10:18
3. বিশ্বস্ত হওয়া এবং পরীক্ষার মাধ্যমে সহ্য করার আহ্বান — 10:19-12:29
4. চূড়ান্ত উপদেশদান এবং অভিবাদন — 13:1-25
1
যীশু খ্রীষ্ট সর্বপ্রধান মধ্যস্থ। যীশু দূতদের থেকে মহান
সর্বশক্তিমান ঈশ্বর অতীতে নানাভাবে ও অনেকবার ভাববাদীদের মাধ্যমে আমাদের পিতৃপুরুষদের সঙ্গে কথা বলেছিলেন, আর এই দিনের ঈশ্বর পুত্রের মাধ্যমে আমাদের সঙ্গে কথা বলেছেন, তিনি তাঁর পুত্রকেই সব কিছুর উত্তরাধিকারী করেছেন এবং তাঁর মাধ্যমে পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন। তাঁর পুত্রই হল তাঁর মহিমার প্রকাশ ও সারমর্মের চরিত্র এবং নিজের ক্ষমতার বাক্যের মাধ্যমে সব কিছু বজায় রেখেছেন। পরে তিনি সব পাপ পরিষ্কার করেছেন, তিনি স্বর্গে ঈশ্বরের মহিমার ডানদিকে বসলেন। তিনি স্বর্গ দূতদের থেকে শ্রেষ্ঠ, তেমনি তাঁদের নামের থেকে তিনি আরো মহান। কারণ ঈশ্বর ঐ দূতদের মধ্যে কাকে কোন্ দিনের বলেছেন, “তুমি আমার পুত্র, আমি আজ তোমার পিতা হয়েছি,” আবার, “আমি তাঁর পিতা হব এবং তিনি আমার পুত্র হবেন”? পুনরায়, যখন ঈশ্বর প্রথমজাতকে পৃথিবীতে আনেন, তখন বলেন, “ঈশ্বরের সব স্বর্গদূত তাঁর উপাসনা করুক।” আর স্বর্গীয় দূতের বিষয়ে ঈশ্বর বলেন, “ঈশ্বর নিজের দূতদের আত্মার তৈরী করে, নিজের দাসদের আগুনের শিখার মত করে।” কিন্তু পুত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, “হে ঈশ্বর, তোমার সিংহাসন চিরকাল স্থায়ী; আর সত্যের শাসনদন্ডই তাঁর রাজ্যের শাসনদন্ড। তুমি ন্যায়কে ভালবেসেছ ও অধর্মকে ঘৃণা করেছ; এই কারণ ঈশ্বর, তোমার ঈশ্বর, তোমাকে অভিষিক্ত করেছেন, তোমার অংশীদারদের থেকে বেশি পরিমাণে আনন্দিত করেছে।” 10 আর, “হে প্রভু, তুমিই আদিতে পৃথিবীর ভিত্তিমূল স্থাপন করেছ, স্বর্গও তোমার হাতের সৃষ্টি। 11 তারা বিনষ্ট হবে, কিন্তু তুমিই নিত্যস্থায়ী; তারা সব পোশাকের মত পুরানো হয়ে যাবে, 12 তুমি পোশাকের মত সে সব জড়াবে, পোশাকের মত জড়াবে, আর সে সবের পরিবর্তন হবে; কিন্তু তুমি যে, সেই আছ এবং তোমার বছর সব কখনও শেষ হবে না।” 13 কিন্তু ঈশ্বর দূতদের মধ্যে কাকে কোন্ দিনের বলেছেন, “তুমি আমার ডানদিকে বস, যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদেরকে তোমার পদানত না করি”? 14 সব দূতের আত্মাকে কি আমাকে আরাধনা করতে পাঠানো হয়নি? যারা পরিত্রানের অধিকারী হবে, ওরা কি তাদের পরিচর্য্যার জন্য প্রেরিত না?