34
ইলীহূর দ্বিতীয় বক্তৃতা
আবার ইলীহূ কথা বলতে থাকলেন:
“হে জ্ঞানীরা, আমার কথা শুনুন,
আপনাদের যাদের জ্ঞান আছে, আমাকে শুনুন,
কারণ জিভ যেমন খাবারের স্বাদ নেয় তেমনি কান কথার পরীক্ষা করে।
আসুন যা ন্যায্য তা আমরা বেছে নিই:
আসুন যা আমাদের মধ্যে ভাল তার আবিষ্কার করি।
কারণ ইয়োব বললেন, ‘আমি ধার্মিক,
কিন্তু ঈশ্বর আমার অধিকার নিয়ে নিয়েছেন।
আমার অধিকার অগ্রাহ্য হয়,
আমি মিথ্যাবাদীর মত বিবেচিত হব। আমার আঘাত সারে না,
যদিও আমি পাপ বিহীন।’
ইয়োবের মত লোক কে,
কে জলের মত উপহাস পান করে,
তিনি মন্দ কাজকারীদের সঙ্গে থাকেন
এবং তিনি পাপীদের সঙ্গে হাঁটেন?
কারণ তিনি বলেছেন,
‘ঈশ্বর যা চান সেই কাজ করার মধ্যে দিয়ে মানুষের কোন আনন্দ নেই।’
10 তাই আমার কথা শোন,
তোমরা বুদ্ধিমান লোকেরা: এটা ঈশ্বরের দূরে থাক যে তিনি মন্দ কাজ করবেন;
সর্বশক্তিমানের থেকে এটা দূরে থাক যে তিনি পাপ করবেন।
11 কারণ তিনি মানুষকে তার কাজের ফল দিয়ে থাকেন;
তিনি প্রত্যেক মানুষকে তার নিজের পথ অনুযায়ী পুরষ্কার দেন।
12 সত্যি, ঈশ্বর কোন মন্দ কাজ করেন নি,
না সর্বশক্তিমান কোনদিন ন্যায়বিচার বিকৃত করেছেন।
13 পৃথিবীর কর্তৃত্বভার তাকে কে দিয়েছে?
সমস্ত পৃথিবীর দায়িত্ব তাকে কে দিয়েছে?
14 যদি তিনি তার উদ্দেশ্য কেবল নিজের ওপরই রাখেন
এবং যদি তিনি নিজের আত্মা এবং প্রাণবায়ু সংগ্রহ করেন,
15 তবে সমস্ত মানুষ একসঙ্গে ধ্বংস হবে;
মানবজাতি আবার ধূলোয় ফিরে যাবে।
16 এখন যদি আপনার বোধশক্তি থাকে,
এটা শুনুন; আমার কথা শুনুন।
17 যে ন্যায়বিচার ঘৃণা করে সেকি শাসন করতে পারে?
আপনি কি ঈশ্বরকে দোষী করবেন,
যিনি ধার্মিক এবং পরাক্রমী?
18 ঈশ্বর, যিনি একজন রাজাকে বলেছেন,
‘তুমি নীচ,’ অথবা একজন অভিজাত ব্যক্তিকে বলেছেন, ‘তুমি পাপী?’
19 ঈশ্বর, যিনি নেতাদের প্রতি কখনও পক্ষপতিত্ব দেখান নি
এবং গরিবদের থেকে ধনীদের বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন নি,
কারণ তারা সবাই তাঁর হাতের তৈরী।
20 তারা হঠাৎ মারা যাবে; মাঝরাতে লোকেরা কেঁপে উঠবে
এবং মারা যাবে; পরাক্রমীরা মারা যাবে,
কিন্তু মানুষের হাতের দ্বারা নয়।
21 কারণ মানুষের চলার পথে ঈশ্বরের চোখ আছে;
তিনি তার সমস্ত পায়ের চিহ্ন দেখেন।
22 সেখানে কোন অন্ধকার নেই,
কোন ঘন আঁধার নেই যেখানে অপরাধীরা নিজেদের লোকাতে পারে।
23 কারণ একজন ব্যক্তিকে বার বার পরীক্ষা করার ঈশ্বরের প্রয়োজন নেই;
বিচারে তাঁর সামনে যাওয়ার কোন প্রয়োজন নেই।
24 তিনি পরাক্রমীদের টুকরো টুকরো করে ভেঙ্গেছেন
তাদের পথের জন্য যার আর কোন তদন্ত করার প্রয়োজন নেই;
তিনি অন্যদের তাদের জায়গায় রেখেছেন।
25 এই ভাবে তিনি তাদের কাজের বিষয়ে জানেন;
রাতে তিনি এই লোকেদের ফেলে দেন;
তাতে তারা ধ্বংস হয়।
26 অন্যদের চোখের সামনে,
তাদের পাপ কাজের জন্য তিনি তাদের অপরাধীদের মত মেরে ফেলেন
27 কারণ তারা তাঁর পথে অনুসরণ করা ছেড়ে দিয়েছিল
এবং তাঁর পথে চলতে অস্বীকার করেছিল।
28 এই ভাবে, তারা গরিবদের কান্না তাঁর কাছে আনল;
তিনি পীড়িতদের কান্না শুনলেন।
29 যখন তিনি নীরব থাকেন,
কে তাঁকে দোষ দিতে পারে?
যদি তিনি তাঁর মুখ লোকান,
যে তাঁকে দেখতে পাবে?
তিনি একই ভাবে দেশ এবং ব্যক্তির শাসন করেন,
30 যাতে একজন অধার্ম্মিক লোক শাসন করতে না পারে,
যাতে কোন কেউ লোকেদের ফাঁদে ফেলতে না পারে।
31 ধর কেউ যদি ঈশ্বরকে বলে,
‘আমি অবশ্যই দোষী, কিন্তু আমি আর পাপ করব না;
32 যা আমি দেখতে পাই না,
তা আমায় শেখাও; আমি পাপ করেছি,
কিন্তু আমি আর করব না।’
33 আপনি কি মনে করেন যে ঈশ্বর ঐ ব্যক্তির পাপের শাস্তি দেবেন,
যেহেতু আপনি ঈশ্বরের কাজ অপছন্দ করেন?
আমি না, আপনাকে অবশ্যই নির্বাচন করতে হবে।
সুতরাং আপনি যা জানেন বলুন।
34 বুদ্ধিমান লোকেরা আমায় বলবেন সত্যি,
প্রত্যেক জ্ঞানী লোক যারা আমার কথা শুনবে তারা বলবে,
35 ‘ইয়োব জ্ঞানহীনের মত কথা বলছে;
তার কথা গুলো জ্ঞানহীন।’
36 আহা, ইয়োবকে যদি শেষ পর্যন্ত পরীক্ষিত হয় ভাল
কারণ তার কথ পাপী মানুষদের মত।
37 কারণ তিনি তার পাপের সঙ্গে বিদ্রোহ যোগ করেন;
তিনি উপহাসে আমাদের মধ্যে হাততালি দেন;
তিনি ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অনেক কথা বলেন।”