3
বিশ্বাস না বিধান পালন
ওহে অবুঝ গালাতীয়রা! কে তোমাদের জাদু করেছে? তোমাদেরই চোখের সামনে ক্রুশবিদ্ধ যীশু খ্রীষ্টের রূপ স্পষ্টভাবে চিত্রিত হয়েছে। আমি তোমাদের কাছে থেকে কেবলমাত্র একটি বিষয় জানতে চাই। তোমরা কি বিধান পালন করে পবিত্র আত্মা লাভ করেছিলে, নাকি যা শুনেছিলে তা বিশ্বাস করে? তোমরা কি এতই নির্বোধ? সেই আত্মায় শুরু করে, এখন কি তোমরা মানবিক প্রচেষ্টায় লক্ষ্য অর্জন করতে চাইছ? তোমরা কি বৃথাই এত কষ্টভোগ করেছ—যদি তা প্রকৃতই বৃথা হয়ে থাকে? ঈশ্বর তোমাদের তাঁর আত্মা দান করেন ও তোমাদের মধ্যে অলৌকিক সব কাজ করেন, কারণ তোমরা বিধান পালন করো বলে নাকি যা শুনেছিলে, তা বিশ্বাস করেছ বলে? অব্রাহামের কথা বিবেচনা করো। তিনি “ঈশ্বরকে বিশ্বাস করলেন, তিনি তা অব্রাহামের পক্ষে ধার্মিকতা বলে গণ্য করলেন।”*
তাহলে বুঝে নাও, যারা বিশ্বাস করে, তারাই অব্রাহামের সন্তান। শাস্ত্র আগেই দেখেছিল যে, ঈশ্বর অইহুদি জাতিদের বিশ্বাসের দ্বারা নির্দোষ প্রতিপন্ন করবেন এবং সেই সুসমাচার অব্রাহামের কাছে আগেই ঘোষণা করেছিলেন। “সমস্ত জাতি তোমার মাধ্যমে আশীর্বাদ লাভ করবে।” তাই যাদের বিশ্বাস আছে, তারা বিশ্বাসী অব্রাহামের সঙ্গেই আশীর্বাদ লাভ করেছে।
10 যারা বিধান পালনের উপরে আস্থাশীল, তারা সকলে এক অভিশাপের অধীন, কারণ লেখা আছে, “প্রতিটি লোক অভিশপ্ত যে বিধানের সব কথাগুলি পালন করে না।” 11 স্পষ্টত, কোনো মানুষই বিধানের দ্বারা ঈশ্বরের সাক্ষাতে নির্দোষ প্রতিপন্ন হয় না, কারণ, “ধার্মিক ব্যক্তি বিশ্বাসের দ্বারাই জীবিত থাকবে।”§ 12 বিধান বিশ্বাসভিত্তিক নয়; এর পরিবর্তে, “যে ব্যক্তি এইসব পালন করবে, সে এগুলির দ্বারা জীবিত থাকবে।”* 13 খ্রীষ্টই মূল্য দিয়ে বিধানের অভিশাপ থেকে আমাদের মুক্ত করেছেন, কারণ তিনি আমাদের জন্য অভিশাপস্বরূপ হলেন, কারণ এরকম লেখা আছে, “যে ব্যক্তিকে গাছে টাঙানো হয়, সে অভিশাপগ্রস্ত।” 14 তিনি আমাদের মুক্ত করলেন, যেন যে আশীর্বাদ অব্রাহামকে দেওয়া হয়েছিল, তা খ্রীষ্ট যীশুর মাধ্যমে অইহুদিদের কাছে পৌঁছায়, যেন বিশ্বাসের দ্বারা আমরা পবিত্র আত্মার প্রতিশ্রুতি লাভ করি।
বিধান ও প্রতিশ্রুতি
15 সকল ভাই ও বোন, প্রতিদিনের জীবন থেকে আমি একটি উদাহরণ দিতে চাই। যে দুজনের মধ্যে চুক্তিপত্র ইতিমধ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তাতে যেমন কেউ কিছু বাদ দিতে পারে না বা তাতে কিছু যোগ করতে পারে না, তেমনই এক্ষেত্রে একই কথা প্রযোজ্য। 16 সেই প্রতিশ্রুতিগুলি অব্রাহাম ও তাঁর বংশধরের কাছে বলা হয়েছিল। শাস্ত্র এরকম বলেনি, “বংশধরদের কাছে,” যার অর্থ, অনেকের কাছে, কিন্তু “তোমার বংশের কাছে,” যার অর্থ, একজন ব্যক্তি অর্থাৎ খ্রীষ্টের কাছে। 17 আমি যা বলতে চাই, তা হল, যে বিধান 430 বছর পরে প্রবর্তিত হল, তা পূর্বে ঈশ্বরের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নিয়মকে বাতিল করতে পারে না এবং এভাবে সেই প্রতিশ্রুতি বিফল হতে পারে না। 18 কারণ উত্তরাধিকার যদি বিধানের উপরে নির্ভরশীল হয়, তাহলে তা আর কোনো প্রতিশ্রুতির উপরে নির্ভরশীল হয় না; কিন্তু ঈশ্বর তাঁর অনুগ্রহে এক প্রতিশ্রুতির মাধ্যমে অব্রাহামকে তা দান করেছিলেন।
19 তাহলে, বিধানের উদ্দেশ্য কী ছিল? এই শাস্ত্রীয় বিধান অপরাধের কারণে যুক্ত হয়েছিল, যতক্ষণ না পর্যন্ত যে বংশধরের উদ্দেশে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তাঁর আগমন হয়। স্বর্গদূতদের মাধ্যমে এক মধ্যস্থতাকারীর দ্বারা সেই বিধান কার্যকরী হয়েছিল। 20 যেখানে একটি পক্ষ, সেখানে কোনো মধ্যস্থতাকারী প্রতিনিধিত্ব করে না; কিন্তু ঈশ্বর এক।
21 তাহলে বিধান কি ঈশ্বরের সব প্রতিশ্রুতির বিরোধিতা করেছিল? একেবারেই নয়! কারণ জীবনদানের জন্য যদি কোনো বিধান দেওয়া হত, তাহলে বিধানের দ্বারা অবশ্যই ধার্মিকতা উপলব্ধ হত। 22 কিন্তু শাস্ত্র ঘোষণা করে যে, সমস্ত জগৎ পাপের কাছে বন্দি হয়ে আছে, যেন যা প্রতিশ্রুত হয়েছিল, তা যীশু খ্রীষ্টে বিশ্বাসের মাধ্যমে দেওয়া যায় ও যারা বিশ্বাস করে, তাদের প্রতি দেওয়া হয়।
23 এই বিশ্বাস আসার পূর্বে, আমরা বিধানের দ্বারা বন্দি হয়ে অবরুদ্ধ ছিলাম, যতক্ষণ না বিশ্বাস প্রকাশিত হল। 24 তাই আমাদের খ্রীষ্টের উদ্দেশে চালিত করার জন্য বিধানকে দায়িত্ব দেওয়া হল, যেন আমরা বিশ্বাসের দ্বারা নির্দোষ প্রতিপন্ন হই। 25 এখন সেই বিশ্বাসের আগমন হওয়ায়, আমরা আর বিধানের তত্ত্বাবধানে নেই।
ঈশ্বরের সন্তান
26 তোমরা সকলেই খ্রীষ্ট যীশুতে বিশ্বাসের মাধ্যমে ঈশ্বরের পুত্রকন্যা হয়েছ, 27 কারণ তোমরা সকলে যারা খ্রীষ্টে বাপ্তাইজিত হয়েছ, তারা সকলে খ্রীষ্টকে পরিধান করেছ। 28 ইহুদি কি গ্রিক, ক্রীতদাস কি স্বাধীন, পুরুষ কি স্ত্রী, তোমরা সকলেই খ্রীষ্ট যীশুতে এক। 29 আর তোমরা যদি খ্রীষ্টের হও, তাহলে তোমরা অব্রাহামের বংশ, সেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী উত্তরাধিকারী।
* 3:6 3:6 আদি পুস্তক 15:6 3:8 3:8 আদি পুস্তক 12:3; 18:18; 22:18 3:10 3:10 দ্বিতীয় বিবরণ 27:26 § 3:11 3:11 হবক্‌কূক 2:4 * 3:12 3:12 লেবীয় পুস্তক 18:5 3:13 3:13 দ্বিতীয় বিবরণ 21:23 3:16 3:16 আদি পুস্তক 12:7; 13:15; 24:7