30
একগুঁয়ে জাতিকে ধিক্কার
সদাপ্রভু ঘোষণা করছেন,
“ধিক্ সেই একগুঁয়ে ছেলেমেয়েরা,
যারা বিভিন্ন পরিকল্পনা করে, যেগুলি আমার নয়,
তারা এক মৈত্রীচুক্তি করে, যা আমার নিজের নয়,
তারা পাপের উপরে পাপ ডাঁই করে।
তারা আমার সঙ্গে পরামর্শ না করে
মিশরে নেমে যায়;
যারা ফরৌণের সহায়তার অপেক্ষায় থাকে,
মিশরের ছত্রচ্ছায়ায় খোঁজে আশ্রয়স্থান।
কিন্তু ফরৌণের সুরক্ষা-ব্যবস্থা তোমাদের লজ্জার কারণ হবে,
মিশরের ছত্রচ্ছায়া তোমাদের অপমানস্বরূপ হবে।
যদিও তাদের সম্ভ্রান্তজনেরা সোয়নে আছে,
তাদের দূতবাহিনী হানেষে এসে পৌঁছেছে,
তারা প্রত্যেকেই লজ্জিত হবে,
সেই জাতির কারণে, যারা কোনও উপকারে আসবে না,
যারা কোনো সাহায্য বা সুবিধা, কিছুই আনতে পারবে না,
কেবলমাত্র আনবে লজ্জা ও অপমান।”
নেগেভের* পশুদের সম্পর্কে ভবিষ্যদ্‌বাণী:
যদিও সেই দেশ কঠোর পরিশ্রমের ও দুর্দশার,
যেখানে থাকে সিংহ ও সিংহী,
বিষধর সাপ ও উড়ন্ত সর্প,
দূতবাহিনী গাধার পিঠে নিয়ে যাবে তাদের ঐশ্বর্য,
উটের কুঁজে বইবে তাদের সব ধনসম্পদ।
আর নিয়ে যাবে অলাভজনক সেই দেশে,
অর্থাৎ মিশরে, যার সাহায্য সম্পূর্ণ নিরর্থক।
তাই আমি তাকে ডাকি রহব নামে,
অর্থাৎ, যে কোনো কাজের নয়।
 
এবার তুমি যাও, তাদের জন্য একথা পাথরের ফলকে লেখো,
একটি পুঁথিতে তা লিপিবদ্ধ করো,
যেন আগামী সময়ে
তা এক চিরন্তন সাক্ষ্যস্বরূপ হয়।
এরা বিদ্রোহী জাতি, প্রতারণাকারী সন্তান,
যারা সদাপ্রভুর নির্দেশবাণী শুনতে অনিচ্ছুক।
10 তারা দর্শকদের বলে,
“আর কোনো দর্শন দেখবেন না!”
আর ভাববাদীদের বলে,
“যা ন্যায়সংগত, তা আর আমাদের বলবেন না!
আমাদের মনোরম সব কথা বলুন,
মায়াময় বিভ্রান্তির কথা বলুন।
11 এই পথ ছেড়ে দিন,
এই রাস্তা থেকে সরে যান,
আর ইস্রায়েলের পবিত্রতমজনের সঙ্গে
সংঘর্ষ করা থেকে আমাদের অব্যাহতি দিন!”
12 সেই কারণে, ইস্রায়েলের পবিত্রতম জন এই কথা বলেন:
“তোমরা যেহেতু এই বার্তা অগ্রাহ্য করেছ,
অত্যাচারের উপরে নির্ভর করেছ
এবং প্রতারণায় আস্থা রেখেছ,
13 তাই এই পাপ তোমাদের জন্য হবে
এক উঁচু প্রাচীরের মতো, যার মধ্যে ফাটল ধরেছে ও স্থানে স্থানে ফুলে উঠেছে,
যার পতন যে কোনো সময়, মুহূর্তমধ্যে হতে পারে।
14 মাটির পাত্রের মতোই এ চূর্ণবিচূর্ণ হবে,
এমন নির্মমরূপে তা ছড়িয়ে পড়বে
যে তার মধ্যে থেকে এমন একটি টুকরাও পাওয়া যাবে না
যা দিয়ে চুল্লি থেকে আগুন তোলা যেতে পারে,
কিংবা চৌবাচ্চা থেকে জল তোলা যেতে পারে।”
15 সার্বভৌম সদাপ্রভু, ইস্রায়েলের সেই পবিত্রতম জন একথা বলেন:
“মন পরিবর্তন করে শান্ত থাকলেই তোমরা পরিত্রাণ পাবে,
সুস্থির থেকে বিশ্বাস করলে তোমরা শক্তি পাবে,
কিন্তু তোমরা তাতে রাজি হলে না।
16 তোমরা বললে, ‘না, আমরা ঘোড়ায় চড়ে পালিয়ে যাব।’
তাই তোমরা পালিয়ে যাবে!
তোমরা বললে, ‘আমরা দ্রুতগামী ঘোড়ায় চেপে পালিয়ে যাব!’
তাই তোমাদের তাড়নাকারীরা দ্রুতগামী হবে!
17 একজন ভয় দেখালে
তোমাদের এক হাজার জন পালিয়ে যাবে;
পাঁচজনের ভীতি প্রদর্শনে
তোমরা সবাই পালিয়ে যাবে,
যতক্ষণ না তোমরা অবশিষ্ট থাকো
কোনো পর্বতশীর্ষের উপরে একটি পতাকার মতো
বা পাহাড়ের উপরে কোনো নিশানের মতো।”
 
18 তবুও সদাপ্রভু তোমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শনের প্রতীক্ষায় আছেন,
তোমাদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়ার জন্য তিনি উত্থিত হয়েছেন।
কারণ সদাপ্রভু ন্যায়পরায়ণ ঈশ্বর,
ধন্য তারা সবাই যারা তাঁর অপেক্ষায় থাকে!
19 জেরুশালেমে বসবাসকারী, ওহে সিয়োনের লোকেরা, তোমরা আর কাঁদবে না। তোমরা সাহায্যের জন্য কাঁদলে তিনি কত না করুণাবিষ্ট হবেন! শোনামাত্র তিনি তোমাদের উত্তর দেবেন। 20 প্রভু যদিও তোমাদের বিপক্ষতার খাবার ও কষ্টের জল দেন, তোমাদের শিক্ষকেরা আর গুপ্ত রইবেন না; তোমরা স্বচক্ষে তাদের দেখতে পাবে। 21 ডানদিকে বা বাঁদিকে, তোমরা যেদিকেই ফেরো, তোমাদের পিছন দিক থেকে তোমরা একটি কণ্ঠস্বর শুনতে পাবে, “এই হল পথ; তোমরা এই পথেই চলো।” 22 তখন তোমরা রুপোয় মোড়ানো তোমাদের প্রতিমাগুলি ও সোনায় মোড়ানো তোমাদের মূর্তিগুলিকে অশুচি করবে; তোমরা সেগুলি ঋতুমতী নারীর বস্ত্রখণ্ডের মতো ফেলে দিয়ে বলবে, “তোমরা দূর হও!”
 
23 তোমরা মাটিতে যে বীজবপন করবে, সেগুলির জন্য তিনি বৃষ্টিও প্রেরণ করবেন। জমি থেকে যে ফসল আসবে, তা হবে পুষ্ট ও প্রাচুর্যপূর্ণ। সেদিন তোমাদের পশুপাল প্রশস্ত চারণভূমিতে চরে বেড়াবে। 24 যে সমস্ত বলদ ও গর্দভগুলি জমিতে কাজ করে, তারা কাঁটা ও বেলচা দ্বারা ছড়ানো জাব ও ভূষি খাবে। 25 মহা হত্যালীলার দিনে, যখন মিনারগুলি পতিত হবে, প্রত্যেক উঁচু পর্বতের উপরে ও উঁচু পাহাড়ের উপরে জলের স্রোত প্রবাহিত হবে। 26 যখন সদাপ্রভু তাঁর প্রজাদের ক্ষতসকল বেঁধে দেবেন এবং তাঁর দেওয়া যন্ত্রণাগুলি নিরাময় করবেন, তখন চাঁদ সূর্যের মতো দীপ্তি দেবে এবং সূর্যরশ্মি সাতগুণ বেশি উজ্জ্বল হবে, অর্থাৎ সাত দিনের সম্মিলিত দীপ্তির মতো হবে।
27 দেখো, সদাপ্রভুর নাম বহুদূর থেকে ভেসে আসছে,
তা আসছে প্রজ্বলিত ক্রোধ ও ধোঁয়ার ঘন মেঘের সঙ্গে;
তাঁর ওষ্ঠাধর রোষে পূর্ণ এবং
তাঁর জিভ যেন গ্রাসকারী আগুন।
28 তাঁর শ্বাসবায়ু যেন প্রবল বেগে প্রবাহিত স্রোতোধারা,
যা গলা পর্যন্ত উঠে যায়।
ধ্বংস করার জন্য জাতিগুলিকে তিনি চালুনি দিয়ে ছেঁকে নেবেন;
তিনি বিভিন্ন জাতির চোয়ালে বলগা দেবেন,
যা তাদের বিপথে চালিত করবে।
29 আর তোমরা তখন গান গাইবে
যেমন কোনো পবিত্র উৎসব উদ্‌যাপনের সময় তোমরা করে থাকো;
তোমাদের হৃদয় উল্লসিত হবে,
যেমন লোকেরা যখন বাঁশি বাজিয়ে উঠে যাবে
সদাপ্রভুর পর্বতে,
ইস্রায়েলের শৈলের কাছে।
30 সদাপ্রভু লোকেদের তাঁর রাজকীয় মহিমার স্বর শোনাবেন
তারা দেখবে তাঁর বাহু নেমে আসছে
প্রচণ্ড ক্রোধ ও সর্বগ্রাসী আগুনের সঙ্গে,
মেঘগর্জন, বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টির সঙ্গে।
31 সদাপ্রভুর স্বর আসিরিয়াকে ছিন্নভিন্ন করবে;
তাঁর রাজদণ্ড দিয়ে তিনি তাদের আঘাত করবেন।
32 তাঁর শাস্তির দণ্ড দিয়ে সদাপ্রভু
যে প্রতিটি আঘাত তাদের করবেন,
তা হবে খঞ্জনি ও বীণার ধ্বনির সঙ্গে,
যখন তিনি রণভূমিতে তাঁর হাতের আঘাতে তাদের সঙ্গে যুদ্ধ করবেন।
33 তোফৎ তো বহুপূর্বেই প্রস্তুত হয়ে আছে;
এ রাজার জন্য প্রস্তুত আছে।
এর আগুনের গর্ত গভীর ও প্রশস্ত করা হয়েছে,
যার মধ্যে আছে আগুনের জন্য প্রচুর কাঠ;
সদাপ্রভুর শ্বাসবায়ু,
প্রজ্বলিত গন্ধকের স্রোতের মতো,
যা তাতে আগুন ধরাবে।
* 30:6 30:6 অর্থাৎ, যিহূদার নেগেভের।