7
“পৃথিবীতে কি নশ্বর মানুষকে কঠোর পরিশ্রম করতে হয় না?
ভাড়াটে মানুষের মতো তার দিনগুলি কি নয়?
ক্রীতদাস যেমন সান্ধ্য ছায়ার জন্য ব্যাকুল হয়,
বা দিনমজুর বেতনের অপেক্ষায় থাকে,
সেভাবে ব্যর্থতাযুক্ত মাস আমার জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে,
আর দুর্দশাযুক্ত রাত আমার জন্য নিরূপিত হয়েছে।
শুয়ে শুয়ে আমি ভাবি, ‘কখন উঠব?’
রাত বেড়েই গেল, আর আমি ভোর পর্যন্ত বিছানায় ছটফট করে গেলাম।
আমার শরীর পোকা ও খোস-পাঁচড়ায় ভরে উঠেছে,
আমার গায়ের চামড়ায় ফাটল ধরেছে ও তা পেকে গিয়েছে।
 
“আমার দিনগুলি তাঁতির মাকুর চেয়েও দ্রুতগামী,
আর কোনও আশা ছাড়াই সেগুলি শেষ হয়ে যায়।
হে ঈশ্বর, মনে রেখো, যে আমার জীবন এক শ্বাসমাত্র;
আমার দু-চোখ আর কখনও আনন্দ দেখতে পাবে না।
যে চোখ আজ আমায় দেখতে পাচ্ছে তা আর কখনও আমায় দেখতে পাবে না;
তুমি আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমি আর থাকব না।
মেঘ যেমন মুহূর্তে মিলিয়ে যায়,
সেভাবে যে কবরে* যায় সে আর ফিরে আসে না।
10 সে আর তার বাড়িতে ফিরে আসবে না;
তার স্থান তাকে আর চিনতেও পারবে না।
 
11 “তাই আমি আর নীরব থাকব না;
আমার আত্মার যন্ত্রণায় আমি কথা বলব,
আমার প্রাণের তিক্ততায় আমি অভিযোগ জানাব।
12 আমি কি সমুদ্র না সমুদ্রদানব
যে তুমি আমাকে পাহারা দিয়ে রেখেছ?
13 যখন আমি ভাবি যে আমার বিছানা আমাকে সান্ত্বনা দেবে
আর আমার শয্যা আমার অসুখ দূর করবে,
14 তখনও তুমি বিভিন্ন স্বপ্ন দেখিয়ে আমাকে ভয় দেখাও
আর বিভিন্ন দর্শন দিয়ে আমাকে আতঙ্কিত করো,
15 তাতে আমার এই শরীরের চেয়েও
শ্বাসরোধ ও মৃত্যুও আমার কাছে বেশি পছন্দসই হয়।
16 আমি আমার জীবনকে ঘৃণা করি; আমি চিরকাল বাঁচতে চাই না।
আমায় একা থাকতে দাও; আমার জীবনের দিনগুলি অর্থহীন।
 
17 “মানবজাতি কী যে তুমি তাদের এত বিরাট কিছু মনে করো,
যে তুমি তাদের প্রতি এত মনোযোগ দাও,
18 যে প্রতিদিন সকালে তুমি তাদের পরখ করো
আর প্রতি মুহূর্তে তাদের পরীক্ষা করো?
19 তুমি কি কখনও আমার দিক থেকে তোমার দৃষ্টি ফেরাবে না,
বা ক্ষণিকের জন্যও কি আমায় একা থাকতে দেবে না?
20 আমি যদি পাপ করেই থাকি, আমাদের সব কাজ যাঁর দৃষ্টিগোচর,
সেই তোমার প্রতি আমি কী করেছি?
তুমি আমাকে কেন তোমার লক্ষ্যবস্তু করেছ?
আমি কি তোমার কাছে বোঝা হয়েছি?
21 তুমি কেন আমার অপরাধ মার্জনা করছ না
ও আমার পাপ ক্ষমা করছ না?
কারণ অচিরেই আমি ধুলোয় মিশে যাব;
তুমি আমার খোঁজ করবে, কিন্তু আমি আর থাকব না।”
* 7:9 7:9 হিব্রু ভাষায়, সিয়োলে, বা পাতালে 7:20 7:20 কোনো কোনো প্রাচীন অনুলিপি অনুসারে, আমি নিজের কাছেই এক বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছি