15
যিহূদার রাজা অবিয়
1 নবাটের ছেলে যারবিয়ামের রাজত্বের অষ্টাদশতম বছরে অবিয় যিহূদার রাজা হলেন,
2 এবং জেরুশালেমে তিনি তিন বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর মায়ের নাম মাখা, ও তিনি অবীশালোমের মেয়ে।
3 তিনি সেইসব পাপ করলেন, যা তাঁর বাবা তাঁর আগে করে গেলেন; তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের অন্তর যেমন তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিত ছিল, অবিয়র অন্তর কিন্তু সেভাবে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিত ছিল না।
4 তা সত্ত্বেও, দাউদের খাতিরে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য এক ছেলে দেওয়ার ও জেরুশালেমকে মজবুত করার মাধ্যমে তাঁর ঈশ্বর সদাপ্রভু জেরুশালেমে তাঁকে এক প্রদীপ দিলেন।
5 একমাত্র হিত্তীয় ঊরিয়র নজিরটি বাদ দিলে—দাউদ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা যা উপযুক্ত, তাই করলেন এবং তাঁর সম্পূর্ণ জীবনকালে সদাপ্রভুর কোনও আদেশ পালন করতে ব্যর্থ হননি।
6 অবিয় ও যারবিয়ামের মধ্যে যে যুদ্ধ শুরু হল, অবিয় যতদিন বেঁচেছিলেন ততদিন তা চলেছিল।
7 অবিয়র রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যা যা করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? অবিয় ও যারবিয়ামের মধ্যে যুদ্ধ লেগেই ছিল।
8 অবিয় তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন এবং তাঁকে দাউদ-নগরে কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে আসা রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।
যিহূদার রাজা আসা
9 ইস্রায়েলের রাজা যারবিয়ামের রাজত্বের বিংশতিতম বছরে আসা যিহূদার রাজা হলেন,
10 এবং জেরুশালেমে তিনি একচল্লিশ বছর রাজত্ব করলেন। তাঁর ঠাকুমার নাম মাখা, তিনি অবীশালোমের মেয়ে ছিলেন।
11 আসা তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের মতো, সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা ন্যায্য, তাই করলেন।
12 মন্দির-সংলগ্ন দেবদাসদের তিনি দেশ থেকে তাড়িয়ে দিলেন এবং তাঁর পূর্বপুরুষদের তৈরি করা প্রতিমার মূর্তিগুলিও দূর করলেন।
13 এমনকি তিনি রাজমাতার পদ থেকে তাঁর ঠাকুমা মাখাকে সরিয়ে দিলেন, কারণ আশেরার পুজো করার জন্য মাখা জঘন্য এক মূর্তি তৈরি করলেন। আসা সেটি কেটে ফেলে দিলেন এবং কিদ্রোণ উপত্যকায় সেটি জ্বালিয়ে দিলেন।
14 যদিও তিনি পূজার্চনার উঁচু স্থানগুলি উপড়ে ফেলেননি, তবুও আজীবন আসার অন্তর সদাপ্রভুর প্রতি পুরোপুরি সমর্পিতই ছিল।
15 সদাপ্রভুর মন্দিরে তিনি রুপো ও সোনা এবং সেইসব জিনিসপত্র এনে রেখেছিলেন, যেগুলি তিনি ও তাঁর বাবা উৎসর্গ করলেন।
16 আসা ও ইস্রায়েলের রাজা বাশার মধ্যে তাদের অধিকারভুক্ত এলাকার সর্বত্র যুদ্ধ লেগেই ছিল।
17 ইস্রায়েলের রাজা বাশা যিহূদার বিরুদ্ধে উঠে গেলেন এবং রামা নগরটি সুরক্ষিত করে সেখানে ঘাঁটি গেড়েছিলেন, যেন যিহূদার রাজা আসার এলাকা থেকে কেউ বেরিয়ে আসতে না পারে বা সেখানে ঢুকতেও না পারে।
18 আসা তখন সদাপ্রভুর মন্দির থেকে ও তাঁর নিজের প্রাসাদের কোষাগারে পড়ে থাকা সব রুপো ও সোনা নিয়ে তাঁর কর্মকর্তাদের হাতে তুলে দিলেন এবং সেগুলি অরামের রাজা সেই বিন্হদদের কাছে পাঠিয়ে দিলেন, যিনি হিষিয়োণের নাতি ও টব্রিম্মোণের ছেলে ছিলেন, এবং তখন যিনি দামাস্কাসে রাজত্ব করছিলেন।
19 “আপনার ও আমার মধ্যে এক চুক্তি হোক,” তিনি বললেন, “যেমনটি আমার বাবা ও আপনার বাবার মধ্যে ছিল। দেখুন, আমি আপনার কাছে রুপো ও সোনার কিছু উপহার পাঠাচ্ছি। এখন আপনি ইস্রায়েলের রাজা বাশার সঙ্গে করা আপনার চুক্তিটি ভেঙে ফেলুন, তবেই সে আমার কাছ থেকে পিছিয়ে যাবে।”
20 বিন্হদদ আসার কথায় রাজি হলেন এবং ইস্রায়েলের নগরগুলির বিরুদ্ধে তাঁর সৈন্যদলের সেনাপতিদের পাঠালেন। নপ্তালি ছাড়াও তিনি ইয়োন, দান, আবেল বেথ-মাখা ও সম্পূর্ণ কিন্নেরৎ দখল করে নিয়েছিলেন।
21 বাশা যখন একথা শুনতে পেলেন, তিনি রামা নগরটি গড়ে তোলার কাজ বন্ধ করে দিলেন এবং তির্সার দিকে পিছিয়ে গেলেন।
22 তখন রাজা আসা যিহূদার সর্বত্র এক আদেশ জারি করলেন—কেউ এর এক্তিয়ার থেকে অব্যাহতি পায়নি—এবং তারা রামা থেকে সেইসব পাথর ও কাঠ তুলে নিয়ে এসেছিল, যেগুলি বাশা সেখানে ব্যবহার করছিলেন। সেগুলি দিয়েই রাজা আসা বিন্যামীনে গেবা, ও পাশাপাশি মিস্পাও গেঁথে তুলেছিলেন।
23 আসার রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, তাঁর সব কীর্তি, তিনি যা যা করলেন ও যেসব নগর তিনি তৈরি করলেন, তার বিবরণ কি যিহূদার রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই? বৃদ্ধ বয়সে অবশ্য তাঁর পায়ে রোগ দেখা দিয়েছিল।
24 পরে আসা তাঁর পূর্বপুরুষদের সঙ্গে চিরবিশ্রামে শায়িত হলেন ও তাঁকে তাঁর পূর্বপুরুষ দাউদের নগরে তাদের কাছেই কবর দেওয়া হল। তাঁর ছেলে যিহোশাফট রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।
ইস্রায়েলের রাজা নাদব
25 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের দ্বিতীয় বছরে যারবিয়ামের ছেলে নাদব ইস্রায়েলে রাজা হলেন, এবং ইস্রায়েলে তিনি দুই বছর রাজত্ব করলেন।
26 তাঁর বাবার পথ অনুসরণ করে ও তাঁর বাবা ইস্রায়েলকে দিয়ে যে পাপ করিয়েছিলেন, সেই একই পাপ করে তিনিও সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করলেন।
27 ইষাখর-কুলভুক্ত অহিয়র ছেলে বাশা নাদবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলেন, এবং নাদব ও সমস্ত ইস্রায়েল যখন ফিলিস্তিনী এক নগর গিব্বথোনের চারদিকে অবরোধ গড়ে তুলেছিলেন, তখন সেখানেই বাশা তাঁকে আঘাত করে মেরে ফেলেছিলেন।
28 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের তৃতীয় বছরে বাশা নাদবকে হত্যা করলেন ও রাজারূপে তাঁর স্থলাভিষিক্ত হলেন।
29 রাজত্ব শুরু করামাত্রই তিনি যারবিয়ামের পরিবারের সবাইকে হত্যা করে ফেলেছিলেন। সদাপ্রভু তাঁর দাস শীলোনীয় অহিয়র মাধ্যমে যে কথা বললেন, সেই কথানুসারে তিনি যারবিয়ামের পরিবারে শ্বাস নেওয়ার জন্যও কাউকে অবশিষ্ট রাখেননি, কিন্তু তাদের সবাইকে মেরে ফেলেছিলেন।
30 যারবিয়াম যেহেতু স্বয়ং পাপ করলেন ও ইস্রায়েলকে দিয়েও পাপ করিয়েছিলেন, এবং যেহেতু ইস্রায়েলের ঈশ্বর সদাপ্রভুর ক্রোধ তিনি জাগিয়ে তুলেছিলেন, তাই এরকমটি হল।
31 নাদবের রাজত্বকালের অন্যান্য সব ঘটনা, ও তিনি যেসব কাজ করলেন, তার বিবরণ কি ইস্রায়েলের রাজাদের ইতিহাস-গ্রন্থে লেখা নেই?
32 আসা ও ইস্রায়েলের রাজা বাশার মধ্যে তাদের অধিকারভুক্ত এলাকার সর্বত্র যুদ্ধ লেগেই ছিল।
ইস্রায়েলের রাজা বাশা
33 যিহূদার রাজা আসার রাজত্বের তৃতীয় বছরে অহিয়র ছেলে বাশা তির্সায় সমস্ত ইস্রায়েলের রাজা হলেন, এবং তিনি চব্বিশ বছর রাজত্ব করলেন।
34 যারবিয়ামের পথ অনুসরণ করে ও যারবিয়াম ইস্রায়েলকে দিয়ে যে পাপ করিয়েছিলেন, সেই একই পাপ করে তিনিও সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা মন্দ, তাই করলেন।