পবিত্র তৌরাত শরিফ দুছরা ছিপারা
হিজরত
পরিচিতি
হিজরত ছিপারা অইলো পবিত্র তৌরাত শরিফর দুই নম্বর ছিপারা। আল্লা পাকে অউ ছিপারার মাজে তান পয়দা করা আশরাফুল মখলুকাতর (সৃষ্টির সেরা জাত) গেছে নিজর পরিচয় জাইর করছইন। আল্লার মুনশা-মর্জি, কুন কাম করলে তাইন খুশি আর কুন কামে তাইন বেজার অইন, আর তান বন্দা অকলরে তাইন কত মায়া করইন, নাফরমান অকলরে তৌবা করার কত বেশি সুযোগ দেইন, অউ ছিপারার মাজে ইতা জানা যায়।
ই ছিপারার মাজে আল্লার নবী হজরত মুছা (আঃ) অর ইতিহাস আছে। তান জনম, তাইন কিলা হুরু থাকি বড় অইলা, কেমনে দেশান্তরি অইলা, আর কুন হালতে আল্লা মাবুদর দিদার-দরশন পাইলা অতা জানা যায়।
মুছা (আঃ) অর জমানার ৪০০ বছর আগে, মিসরর বাদশা এক ফেরাউনে হজরত ইউছুফ (আঃ) রে খুব মায়া করতা, ইউছুফর বাবা হজরত ইয়াকুব (আঃ) অর বংশধর বনি ইছরাইলরেও খুব মায়া করতা। মিসরী অকলে এরারে বনি ইছরাইল না কইয়া, ইবরানি কইয়া ডাকিতা। ইবরানি শব্দর মানি অইলো, রিফুজি বা বৈতল। ইউছুফ (আঃ) অর উফাতর বাদে, আরক ফেরাউন মিসরর বাদশা অইয়া বনি ইছরাইলর উপরে খুব জুর-জুলুম করিয়া তারারে গুলাম বানাইলো, অইলে আল্লায় হজরত মুছা (আঃ) রে পাঠাইয়া বনি ইছরাইলরে ফেরাউনর গুলামি থাকি আজাদ করলা।
আল্লা পাকে হজরত মুছা (আঃ) অর গেছে বনি ইছরাইল আর তামাম আদম জাতির লাগি আল্লার শরিয়তর চিরকালিন দশটা হুকুম জানাইলা। অউ হুকুম হক্কল নবী, রছুল, পেগাম্বরে মানছইন। এর কুনু রদ-বদল নাই।
অউ ছিপারাত দেখা যায়, আল্লায় হজরত মুছারে হুকুম দিলা আল্লার লাগি তাইন একখান পবিত্র ঘর বানাইতা, অউ ঘরর নকশাও আল্লায় তানরে দেখাইলা। অউ ঘরর ভিতরে আছিল পবিত্র হেরেম শরিফ, মানষে ই ঘররে পবিত্র মিলন-তাম্বু কইয়া ডাকিতা। ইখান অইলো হউ আমলর কাবা শরিফ, আস্তা দুনিয়ার হকল মুমিনর কিবলা। বনি ইছরাইল জাতি অউ সময় মুছাফিরর লাখান জাগায় জাগায় গিয়া রইতা, এরলাগি অউ এবাদত খানারে তারার লগে করি বইয়া নিতা। আর ই ছিপারার হেশে আছে, হজরত মুছা (আঃ) অর হুকুম মাফিক বনি ইছরাইলে অউ তাম্বু ঘর বানাইলা।
এরমাজে আছে:
(ক) আল্লায় বনি ইছরাইলরে আজাদ করলা ১:১—১৫:২১ আয়াত
(খ) মরুভুমিত বনি ইছরাইলর ছফর ১৫:২২—১৮:২৭ আয়াত
(গ) মাবুদর লগে তান বন্দার মিলনর উছিলা ১৯—২৪ রুকু
(ঘ) আল্লার পবিত্র ঘর বানানির হুকুম ২৫—৩১ রুকু
(ঙ) আল্লার বিরুদ্ধে বনি ইছরাইলর নাফরমানি ৩২—৩৪ রুকু
(চ) আল্লার পবিত্র ঘর বানানি ৩৫—৪০ রুকু
আল্লায় বনি ইছরাইলরে আজাদ করলা (১:১—১৫:২১)
1
বনি ইছরাইলর উপরে জুলুম
1 আল্লায় হজরত ইয়াকুবর নয়া নাম দিছলা ইছরাইল, এরলাগি তান বংশর নাম অইলো বনি ইছরাইল। ইয়াকুবে তান বিবিন-বাইচ্চাইন আর পরিবারর হকলরে লইয়া মিসর দেশো গেলাগি। অউ সময় তান লগে অইয়া যেরা গেলা, এরার নাম অইলো,
2 রুবেন, শিমিয়ন, লেবি, এহুদা,
3 ইছাখর, সবুলন, বিন-ইয়ামিন,
4 দান, নপ্তালি, ছাদু আর আশির।
5 ইয়াকুবর বংশর হক্কলতায় মিলিয়া সত্তইর জন আছলা। আর ইউছুফ আগ থাকিউ মিসরো থাকতা।
6 বাদে ইউছুফ, তান ভাইয়াইন, আর হি আমলর হকল মারা গেলা।
7 অইলে তারার বাদর বংশধর বাড়িয়া খুব বলআলা অইলা। এরা চাইরোবায় ছিতরিয়া আস্তা মিসর দেশ ভরিগেলা।
8 এরমাজে মিসরো একজন নয়া বাদশা অইলা, এইন ইউছুফরে চিনইন না।
9 এইন নিজর প্রজা অকলরে কইলা, “চাইয়া দেখো, বনি ইছরাইল আমরা থাকি বেশিও আর বলআলাও।
10 তে আও, আমরা এক ফন্দি করি, ইতা যেনু আর না বাড়ইন। আরনায় তারা বাড়িয়া হেশে যুদ্ধর কালো আমরার দুশমনর লগে মিলিয়া আমরার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবো, বাদে আমরার দেশ থাকি যাইবোগি।”
11 তেউ তারা সর্দার লাগাইলা এরারে মারিয়া-ধরিয়া জুর-জুলুম করিয়া কাম করানির লাগি। এরা ফেরাউনর ফসল রাখার লাগি পীথুম আর রামাষেষ নামর দুইটা টাউনও বানাইলা।
12 অইলে এরার উপরে যত বেশি জুর-জুলুম করা অইলো, এরাও অতো বেশি বাড়িলা আর ছিতরিলা। এরলাগি মিসরী অকলে বনি ইছরাইলরে খুব ডরাইগেলা।
13 ডরাইয়া এরারেদি আরো কঠিন কাম করাইলা।
14 মাটি কাম, ইটর কাম আর খেতর মাজে কষ্টর কাম করাইয়া এরার জানরে তিত্বা বানাইলিলো। আর তারা জুর-জুলুম করিয়া নিষ্ঠুর-পাষানর লাখান কাম করাইতো।
15 বাদে মিসরর বাদশায় শিফ্রা আর ফুয়া নামর দুইজন ইবরানি দাই বেটিরে হুকুম দিলা,
16 “তুমরা ইবরানি বেটিন্তর দাই গিরিত গিয়া, ইতার পুয়াইন পয়দা অইলেউ মারিলাইও, খালি পুড়িন্তরে জিতা রাখিও।”
17 অইলে হি দাই বেটিন্তে আল্লারে ডরাইতা গতিকে, মিসরী বাদশার হুকুম না মানিয়া পুয়াইন্তরেও জিতা রাখতা।
18 তেউ বাদশায় এরারে নিয়া জিকাইলা, “ইতা কাম কেনে করলায়? পুয়াইন্তরে কেনে জিতা রাখলায়?”
19 তারা জুয়াপ দিলা, “ইবরানি বেটিন মিসরী বেটিন্তর লাখান নায়, তারা বউত বলআলা। দাইবেটি তারার কাছাত যাইবার আগেউ তারার হুরুতা পয়দা অইযায়।”
20-21 অউ দুইও বেটিয়ে আল্লারে ডরাইতা করি, আল্লায় রহমত করিয়া তারারেও আওলাদ দিলা। আর বনি ইছরাইলও আরো বেশি করি বাড়িয়া খুব শক্তিমান অইলা।
22 ইতা দেখিয়া ফেরাউনে নিজর প্রজা অকলরে হুকুম দিলা, “ইবরানি অকলর কুনু পুয়াইন অইলেউ তুমরা নীল নদো ফালাই দিও, খালি পুড়িন্তরে জিতা রাখিও।”